Pray for the world economy

বাইবেল অনুযায়ী ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমির মালিক কি ইহুদিরা?

 

অবৈধ ও নৃশংস উপায়ে প্রতিষ্ঠিত ইস্রায়েল রাষ্ট্রের পক্ষে ‘দলিল’ হিসেবে টেনে আনা হয় বাইবেলকে। জায়নবাদী (Zionist) খ্রিষ্টান ও ইহুদিরা বাইবেলের আলোকে প্রমাণের চেষ্টা করে ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমির চিরকালীন মালিকানা ইহুদিদের। কিন্তু সত্যিকার অর্থে বাইবেল অধ্যায়ন করা হলে ভিন্ন এক চিত্রই আমাদের চোখে ধরা পড়ে।

 

স্রেফ ইস্রাঈল জাতির মানুষ হলেই কি পবিত্র ভূমির অধিকার? নাকি এর জন্য শর্ত আছে?

 

বাইবেলের পুরাতন নিয়ম (Old testament) অংশে আব্রাহাম [ইব্রাহিম(আ.)] এর বংশধর এবং ইস্রাঈল জাতির সঙ্গে পবিত্র ভূমিকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে ঈশ্বর এই ভূমিকে তাদের জন্য দান করবেন। কিন্তু বাইবেল শুধু এটুকু বলেই থেমে যায়নি। এই ভূমির অধিকারী হবার জন্য কিছু শর্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। বাইবেলে বারংবার বলা হয়েছে ইস্রাঈল জাতিকে ঈশ্বরের আদেশ-নিষেধ এবং বিধি ব্যবস্থা মেনে চলতে হবে। অবাধ্য হওয়া চলবে না। ঈশ্বরের আদেশ-নিষেধ ও বিধি ব্যবস্থা ব্যবস্থা মেনে চলা ব্যতিরেকে পবিত্র ভূমির অধিকার তাদেরকে দেয়া হয়নি। জায়নবাদীরা অনেক সময়েই বাইবেল থেকে ঐ অংশগুলো উদ্ধৃত করে যেখানে ঈশ্বর কর্তৃক ইস্রাঈল জাতিকে পবিত্র ভূমি দান করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ঈশ্বরের অঙ্গীকারের অংশ হবার জন্য যে শর্তগুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো তারা বেমালুম চেপে যায়।

 

বাইবেলে বলা হয়েছে আব্রাহাম [ইব্রাহিম(আ.)] এর সঙ্গে ঈশ্বর যে চুক্তি ও অঙ্গীকার করেছেন, তাঁর উত্তরপুরুষের জন্য এর হকদার হবার শর্ত হল ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসারে জীবন যাপন করা, ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করা।

  

19 আমি অব্রাহামের সাথে এক বিশেষ চুক্তি করেছি| প্রভুর ইচ্ছা অনুসারে জীবনযাপনের জন্যে যাতে অব্রাহামের সন্তানসন্ততি ও উত্তরপুরুষগণ অব্রাহামের আজ্ঞা পালন করে তাই এই ব্যবস্থা করেছি| এটা করেছি যাতে তারা ন্যায়পরায়ণ ও সত্‌ জীবনযাপন করে| তাহলে আমি প্রভু, প্রতিশ্রুত জিনিসগুলি দিতে পারব|[1]

 

জায়নবাদী ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা প্রায়শই ইহুদিদেরকে “Chosen People” বা ঈশ্বরের বাছাইকৃত জাতি হিসেবে প্রচার করে এবং এই ‘যুক্তি’ দেখিয়ে তাদেরকে ফিলিস্তিনের ভূমির একচ্ছত্র দাবিদার বলে আখ্যায়িত করে। অথচ বাইবেলে বলা হয়েছে ঈশ্বরের আদেশ পালন করলে তাহলেই ইস্রাঈল জাতি ঈশ্বরের ‘বিশেষ লোক’ হতে পারবে। স্রেফ ইস্রাঈল জাতির মানুষ হবার জন্যই তারা ‘বিশেষ লোক’ হয়ে যাবে – বিষয়টা এমন না (আর বিষয়টি যদি এমন হয়েও থাকে তাহলে বাইবেল একটি চরম অনৈতিক গ্রন্থ হিসেবে প্রমাণিত হবে যেখানে সৎ কর্ম ব্যতিত শুধু একটা বংশের মানুষ হবার জন্য কাউকে Chosen People বানানো হয়)। 

 

5 তাই এখন আমি তোমাদের আমার নির্দেশগুলো মেনে চলতে বলছি| আমার চুক্তি পালন করো| তোমরা যদি তা করো তাহলে তোমরা হবে আমার বিশেষ লোক| এই পুরো পৃথিবীটাই আমার; কিন্তু আমি তোমাদের আমার বিশেষ লোক হিসেবে মনোনীত করেছি| 6 তোমরা যাজকদের একটি বিশেষ রাজ্য হবে| মোশি তুমি কিন্তু আমি যা বলেছি তা ইস্রায়েলের লোকেদের অবশ্যই বলবে|” 7 তাই মোশি আবার পর্বত থেকে নীচে নেমে এসে ইস্রায়েলের প্রবীণ লোকদের প্রভুর সমস্ত নির্দেশ জানাল| 8 তারা সবাই সমস্বরে জানাল, “প্রভুর সব কথা আমরা মেনে চলব|”তখন মোশি প্রভুকে বলল য়ে প্রত্যেকেই তাঁকে মেনে চলবে|  [2]

 

বাইবেলে উল্লেখ করা হয়েছে, মোশি [মুসা(আ.)] ইস্রাঈল জাতিকে ঈশ্বরের বিধি ব্যবস্থা মানার আদেশ দিয়েছেন। ঈশ্বরের বিধি মানলে তারা ধ্বংস থেকে রক্ষা পাবে এবং ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত দেশে (Promised Land) প্রবেশ করতে ও অধিকার করতে পারবে। এর দ্বারা বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে গেল যে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূমি অধিকার করার পূর্বশর্ত হল ঈশ্বরের বিধি বিধান মেনে চলা।    

 

1 ইস্রায়েলীয়রা, আমি তোমাদের যে বিধি এবং আদেশ শেখাব সেগুলো খুব মন দিয়ে শোন| সেগুলো মান্য করলে তোমরা ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাবে| তাহলেই প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন, সেই দেশে তোমরা প্রবেশ করতে পারবে এবং সেই দেশ অধিকার করতে পারবে|  [3]

 

33 প্রভু তোমাদের ঈশ্বর যে ভাবে আজ্ঞা করেছিলেন, তোমরা অবশ্যই ঠিক সেভাবেই জীবনযাপন করবে| তাহলেই তোমরা দীর্ঘজীবি হবে এবং তোমাদের পক্ষে সব কিছুই ভালো হবে| যে দেশ তোমাদের হবে সেই দেশে তোমরা দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবে|  [4]

 

বাইবেলে উল্লেখ করা হয়েছে ঈশ্বরের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করলে পবিত্র ভূমি হারাতে হবে। সেই দেশ থেকে চলে যেতে হবে।

 

16 তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের সঙ্গে য়ে চুক্তি করেছ তা ভঙ্গ করলে এই দশাই হবে| যদি তোমরা অন্যান্য দেবতার সেবা কর তাহলে এই দেশ তোমাদের হারাতে হবে| অন্য দেবতাদের তোমরা কিছুতেই আরাধনা করবে না| যদি করো প্রভু তোমাদের উপর অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হবেন আর এর ফলে তাঁর দেওয়া দেশ থেকে অচিরেই তোমাদের চলে য়েতে বাধ্য করা হবে|[5]

 

বাইবেলে স্রেফ একটা বংশের মানুষ হবার জন্যই ইস্রাঈল জাতিকে পবিত্র ভূমির অধিকার বা ঈশ্বরের প্রিয়পাত্র হবার লাইসেন্স দিয়ে দেয়া হয়নি। বরং শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের জন্য ঈশ্বরের আজ্ঞাসমূহ পালনের শর্ত দেয়া হয়েছে। ঈশ্বরের আদেশ-নিষেধ পালন না করে শুধুমাত্র ইস্রাঈল বংশের মানুষ হবার জন্য তাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়নি বরং ৭ গুণ বেশি শাস্তি দেবার অঙ্গীকার করা হয়েছে। বলা হয়েছে তারা ঈশ্বরের অবাধ্য হয়ে ঈশ্বরের আদেশের বিরোধিতা করতে থাকলে ঈশ্বর তাদেরকে সমর্থন তো করবেনই না বরং ঈশ্বর তাদের বিরোধিতা করবেন। বাইবেলের লেবীয় পুস্তক (Book of Leviticus) ২৬ নং অধ্যায়ে ইস্রাঈল জাতির উদ্দেশ্যে বলা হয়েছেঃ

 

18“‘এসবের পরেও যদি আমার কথায় তোমরা অবধান না করো, তাহলে তোমাদের পাপসমূহের কারণে আমি তোমাদের সাতগুণ বেশি শাস্তি দেব।

...

21“‘যদি আমার প্রতি তোমরা বৈরীভাবাপন্ন থাকো ও আমার কথা শুনতে না চাও, তাহলে তোমাদের ক্লেশ আমি সাতগুণ বৃদ্ধি করব, যা পাপের কারণে তোমাদের প্রাপ্য।

...

23“‘এত বেশি ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও যদি তোমরা সংশোধিত না হও এবং আমার প্রতি বৈরিতা চালিয়ে যাও, 24তাহলে তোমাদের প্রতি আমি শত্রুতা করব ও তোমাদের পাপের কারণে সাতগুণ ক্লেশ বৃদ্ধি করব।

...

27“‘উদরপূর্তি ও তৃপ্তি না হওয়া সত্ত্বেও যদি তোমরা আমার কথা শ্রবণ না করো কিন্তু আমার বিরোধিতা করতেই থাকো, 28তাহলে আমি ক্রুদ্ধ হয়ে তোমাদের বিরোধিতা করব এবং তোমাদের পাপের কারণে সাতগুণ বেশি শাস্তি আমি তোমাদের দেব [6]

 

ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা না মানলে কী ভয়াবহ পরিনতি নেমে আসবে এবং ঈশ্বর কিভাবে ইস্রাঈল জাতিকে পবিত্র ভূমি থেকে বিতাড়ন করবেন এর উল্লেখ করে বাইবেলে বহু স্থানে আলোচনা আছে [7] যা জায়নবাদী ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা কখনো তাদের আলোচনায় আনে না। তারা এমনভাবে বাইবেলের বাছাইকৃত কিছু অংশ প্রচার করে যা দেখলে মনে হয় শুধু ইস্রাঈল বংশের হবার জন্যই বুঝি ইহুদিরা ঈশ্বরের প্রিয়পাত্র এবং পবিত্র ভূমির অধিকার বুঝি কেবল তাদের! অথচ এমন প্রচারণা তাদের নিজ ধর্মগ্রন্থের ব্যাপারে মিথ্যাচারের শামিল। যদি এই আলোচনার খণ্ডনের জন্য তারা বাইবেল থেকে বাছাই করে এমন অংশ নিয়ে আসে যা দেখলে আপাতভাবে মনে হয় কোনো উত্তম কর্ম এবং বিধি-ব্যবস্থা মানা মানা ব্যতিত স্রেফ ইস্রাঈল জাতির মানুষ হবার জন্যই তারা ঈশ্বরের প্রিয়পাত্র এবং সব অঙ্গীকারের হকদার – তাহলে তারা মূলত নিজ গ্রন্থ বাইবেলকে একটি স্ববিরোধী গ্রন্থ হিসেবে প্রমাণ করবে।

 

বাইবেল অনুসারে ইহুদিরা কি ঈশ্বরের আদেশ পালন করে ঈশ্বরের প্রিয়পাত্র হয়েছে এবং পবিত্র ভূমির হকদার অবস্থায় আছে?

 

উপরে বাইবেলের যে উদ্ধৃতিগুলো দেয়া হয়েছে তা বাইবেলের পুরাতন নিয়ম (Old Testament) অংশের যা ইহুদি ও খ্রিষ্টান উভয় ধর্মালম্বীদের নিকট ঈশ্বরের বাণী হিসেবে স্বীকৃত। এর ব্যবহারিক প্রয়োগের ব্যাপারে ইহুদি ও খ্রিষ্টান উভয় ধর্মের দৃষ্টিকোণ থেকে এখন আলোচনা করা হবে।

 

ইহুদি ধর্মঃ

ইহুদি ধর্মে גָּלוּת (গালুত / Galut) বলে একটি ধারণা আছে। বাংলায় যাকে বলা যেতে পারে ‘নির্বাসন’, ইংরেজিতে ‘Exile’। ইহুদি ধর্মমতে, ইস্রাঈল জাতি যখন ঈশ্বরের বিধি-ব্যাবস্থা অমান্য করে ও পাপে লিপ্ত হয়, ঈশ্বর তাদের উপর বিভিন্ন প্রকারের শাস্তি অবতীর্ণ করেন। এবং তাদেরকে পবিত্র ভূমি থেকে বিতাড়ন করেন বা নির্বাসন দেন। ঈশ্বর তাদের উপর এই ব্যবস্থা নেন যাতে তারা শাস্তি পায় এবং পাপ থেকে ফিরে আসে। এ প্রসঙ্গে বাইবেলে বহু আলোচনা রয়েছে। [8] ইহুদি ধর্মে মোট চারটি নির্বাসনের ধারণা রয়েছে। যথাঃ ব্যাবিলন (৪২৩-৩৭২ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ), পারস্য (৩৭২-৩৪৮ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ), গ্রীস (৩৭১-১৪০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) এবং রোমের (৬৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বর্তমানকাল) নির্বাসন। ৬৯ খ্রিষ্টাব্দে রোমানরা বাইতুল মুকাদ্দাস ধ্বংস করে ইহুদিদেরকে ফিলিস্তিন থেকে যে বিতাড়ন করেছিল, সেটিই সর্বশেষ নির্বাসন। [9]  ইহুদি ধর্মমতে এই নির্বাসনের ব্যপ্তি শেষ হয়নি এবং আজ অবধি চলমান আছে। শেষ যুগে যখন ইহুদিদের মাসিহ আসবেন তখন এই নির্বাসনকাল শেষ হবে এবং ইহুদিরা তাদের আবাসভূমিতে তথা ফিলিস্তিনে ফিরতে পারবে। এইজন্য ধার্মিক ইহুদিরা তাদের মাসিহ এর জন্য অপেক্ষা করছে। [10]

 

সারকথা হল, ইহুদি ধর্ম অনুসারে নিজ পাপের জন্য ইহুদিরা বর্তমানে নির্বাসনকালের মধ্যে আছে, তাদের নির্বাসন এখনো শেষ হয়নি। নির্বাসনের মাঝে আছে – এর অর্থ হল তারা পাপ করেছে, ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা যথাযথভাবে মেনে চলেনি। আর ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা না মানলে পবিত্র ভূমির উপর তাদের অধিকার থাকে কিনা এ ব্যাপারে আমরা ইতিমধ্যেই বাইবেলের আলোকে আলোচনা করেছি। কাজেই এই সময়ে ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমির অধিকার তাদের নেই। বরং তাদের মাসিহ এর আগমনের পরে এই কালের অবসান হবে এবং পবিত্র ভূমিতে তারা ফিরতে পারবে। নির্বাসনের সময়কালের মধ্যে  দলে দলে ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমিতে গমন করা, আলাদা রাজ্য বা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা, অন্য জাতিগুলোর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া – এই কাজগুলো ইহুদি ধর্ম অনুসারে তাদের জন্য নিষিদ্ধ কাজ এবং ঈশ্বরের আদেশের লঙ্ঘন।

[এ প্রসঙ্গে তালমুদের উদ্ধৃতি এবং প্রাচীনকাল থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত যুগশ্রেষ্ঠ ইহুদি পণ্ডিতদের অভিমত সহকারে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে “ইহুদি ধর্ম কি ইস্রায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সমর্থন করে?” অনুচ্ছেদে।] 

 

খ্রিষ্ট ধর্মঃ

ইহুদিরা ঈশ্বরের আদেশ-আজ্ঞা মান্য করেছে কি করেনি, ঈশ্বরের প্রিয়পাত্র হয়েছে কি হয়নি – এই বিষয়ে বাইবেলের নতুন নিয়ম (New Testament) অংশে বহু আলোচনা আছে। বাইবেলের নতুন নিয়ম অংশটি খ্রিষ্টানদের নিকট সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ঈশ্বরের বাণী হিসেবে স্বীকৃত।

 

বাইবেলের নতুন নিয়ম অংশে যিশু খ্রিষ্ট বিভিন্ন স্থানে ঈশ্বরের অবাধ্য হওয়া ও বিধি-বিধান মেনে না চলার  জন্য ইহুদিদের সমালোচনা করেছেন। যা কোনো সাধারণ মাপের সমালোচনা না বরং অত্যন্ত কঠোর ভাষায় সমালোচনা। তিনি ইহুদিদের বহু রকমের ভয়াবহ পাপ কর্মের উল্লেখ করেছেন। তিনি তাদের নরকবাসী হবার কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি তাদের স্রেফ উত্তম বংশের হবার জন্য তাদের প্রশংসা করেননি বরং তাদেরকে “বিষধর সাপের বংশধর” বলে ডাকতেন! এ থেকে বোঝা যায় যিশুর নিকট উত্তম কর্ম ব্যতিত স্রেফ ইস্রাঈল বংশের মানুষ হওয়া কোনো গুরুত্বই বহন করত না বরং খারাপ কর্মের ইহুদিরা তাঁর নিকট “বিষধর সাপের বংশধর” পরিগণিত হতো।

 

33 সাপ, বিষধর সাপের বংশধর! কি করে তোমরা ঈশ্বরের হাত থেকে রক্ষা পাবে? তোমরা দোষী প্রমাণিত হবে ও নরকে যাবে৷ 34 তাই আমি তোমাদের বলছি, আমি তোমাদের কাছে যে ভাববাদী, জ্ঞানীলোক ও শিক্ষকদের পাঠাচ্ছি তোমরা তাদের কারো কারোকে হত্যা করবে, আর কাউকে বা ক্রুশে দেবে, কাউকে বা তোমরা সমাজ-গৃহে চাবুক মারবে৷ এক শহর থেকে অন্য শহরে তোমরা তাদের তাড়া করে ফিরবে৷ 35 এই ভাবে নির্দোষ হেবলের রক্তপাত থেকে শুরু করে বরখায়ার পুত্র সখরিয়, যাকে তোমরা মন্দিরের পবিত্র স্থান ও যজ্ঞবেদীর মাঝখানে হত্যা করেছিলে, সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত যত নির্দোষ ব্যক্তির রক্ত মাটিতে ঝরে পড়েছে, সেই সমস্তের দায় তোমাদের ওপরে পড়বে৷  [11]

 

এই ঘটনার ঠিক পরেই উল্লেখ আছে, যিশু মহা মন্দির {Temple Mount / বাইতুল মুকাদ্দাস} ধ্বংস হবার ব্যাপারে ভবিষ্যতবাণী করছেন। এ থেকে বোঝা যায় ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা লঙ্ঘন এবং পাপে লিপ্ত হবার জন্য ইস্রাঈল জাতির উপর এই শাস্তি নেমে আসছে। এই মহামন্দির ধ্বংসের পরেই ইহুদিদের সর্বশেষ নির্বাসনকাল শুরু হয়েছিল।

 

1 যীশু মন্দির থেকে যখন বের হয়ে যাচ্ছিলেন, সেইসময়তাঁর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে মন্দিরের বড় বড় দালানের দিকে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইলেন৷ 2 এর জবাবে যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা এখন এখানে এসব দেখছ, কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এখানে একটা পাথর আর একটা পাথরের ওপর থাকবে না, এসবই ভুমিস্যাত্ হবে৷’[12]

 

একটি ঘটনায় যিশু খ্রিষ্ট সরাসরি এটি উল্লেখ করেছেন যেঃ ঈশ্বরের রাজ্য ইহুদিদের থেকে নিয়ে নেয়া হবে। এবং অন্য জাতিকে দেয়া হবে। এই স্পষ্ট বক্তব্যের পর আর কোনো তর্কের অবকাশ থাকে না।

 

 42 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা কি শাস্ত্রের এই অংশ পড় নি: ‘রাজমিস্ত্রিরা য়ে পাথরটা বাতিল করে দিয়েছিল, সেই পাথরটাই হয়ে উঠেছে কোণের প্রধান পাথর৷ এটা প্রভুরই কাজ, এটা আমাদের চোখে আশ্চর্য লাগে৷ 43 ‘অতএব, আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছ থেকে নিয়ে নেওযা হবে, আর এমন লোকদের দেওয়া হবে, যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্যের পক্ষে উপযুক্ত ব্যবহার করবে৷ 44 আর ঐ য়ে পাথর তার ওপরে য়ে পড়বে সে ভেঙ্গে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে, আর সেই পাথর যার ওপরে পড়বে তাকে গুঁড়িয়ে ধূলিসাত্ করবে৷’45 প্রধান যাজকরা ও ফরীশীরা যীশুর দেওয়া এই দৃষ্টান্তগুলি শুনে বুঝতে পারলেন যীশু তাদেরই বিষয়ে এই কথাগুলি বললেন৷  [13]

 

বাইবেলে উল্লেখিত সব থেকে মহান ব্যক্তি হচ্ছেন বাপ্তিস্মদাতা যোহন [ইয়াহইয়া (আ.)]। [14]  বাইবেলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই নবী ইহুদিদেরকে তাদের খারাপ কাজের জন্য এবং ঈশ্বরের ক্রোধ নেমে আসা থেকে সতর্ক করতেন। তিনি তাদেরকে আব্রাহাম [ইব্রাহিম(আ.)] এর বংশের মানুষ হবার দোহাই দিতে নিষেধ করতেন। তাঁর মতে উত্তম কর্ম ব্যতিত স্রেফ আব্রাহামের বংশের মানুষ হয়ে কোনো লাভ নেই, কেননা ঈশ্বর চাইলে যে কোনো জায়গা থেকে আব্রাহামের বংশ জারি রাখতে পারেন। উত্তম কর্ম ব্যতিত অসৎ কর্মের স্থান আগুনে। যোহনের এই বক্তব্য দেখে আজকের দিনের জায়নবাদী খ্রিষ্টানদের কথা স্মরণ হয় যারা স্রেফ আব্রাহাম বা ইব্রাহিম(আ.) এর বংশের দোহাই দিয়ে ইহুদিদের সাত খুন মাফ করতে চায়, অন্যায়কারী হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে ঈশ্বরের আশির্বাদের অধিকারী দাবি করে এবং অন্যায্য সুবিধা দিতে চায়।  

 

7 তখন বাপ্তিস্ম নেবার জন্য অনেক লোক যোহনের কাছে আসতে লাগল৷ তিনি তাদের বললেন, ‘হে সাপের বংশধরেরা! ঈশ্বরের কাছ থেকে যে ক্রোধ নেমে আসছে তা থেকে বাঁচার জন্য কে তোমাদের সতর্ক করে দিল? 8 তোমরা যে মন ফিরিয়েছ তার ফল দেখাও৷ একথা বলতে শুরু করো না, যে ‘আরে অব্রাহাম তো আমাদের পিতৃপুরুষ’ কারণ আমি তোমাদের বলছি এই পাথরগুলো থেকে ঈশ্বর অব্রাহামের জন্য সন্তান উত্‌পন্ন করতে পারেন৷ 9 গাছের গোড়াতে কুড়ুল লাগানোই আছে, যে গাছ ভাল ফল দিচ্ছে না তা কেটে আগুনে ফেলে দেওয়া হবে[15]

 

যিশুর মতো যোহনও পাপী ইহুদিদেরকে “সাপের বংশধর” বলে ডাকতেন! যদি স্রেফ ইস্রাঈল বংশের মানুষ হওয়াই মূল্যবান হতো, তাহলে কেন তিনি তাদেরকে “সাপের বংশধর” বলতেন?

 

বাইবেলের নতুন নিয়ম অংশে যিশু শিষ্যদের পত্রগুলোতেও ইহুদিদের চুক্তিভঙ্গ ও ঈশ্বরের অবাধ্যতার নানা বিবরণ আছে। উল্লেখ আছে যে, পাপের দরুণ ইহুদিদের উপর ঈশ্বর খুশী নন। তাদের উপর ঈশ্বরের ক্রোধ নেমে এসেছে।

 

14 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, যিহূদিয়ায় খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাসী ঈশ্বরের য়ে সমস্ত মণ্ডলী আছে, তোমাদের অবস্থা তাদেরই মতো৷ যিহূদিয়ার সেই ঈশ্বরের লোকেরা অন্য ইহুদীদের কাছ থেকে যে রকম নির্য়াতন ভোগ করেছে, তোমরাও তোমাদের নিজেদের দেশের লোকের কাছ থেকে সেই ধরণের নির্য়াতন ভোগ করেছ৷ 15 ইহুদীরা প্রভু যীশুকে এবং ভাববাদীদের হত্যা করেছিল৷ সেই ইহুদীরা আমাদেরও নির্য়াতন করেছে৷ ঈশ্বর তাদের প্রতি খুশী নন, তারা সবারই বিপক্ষে৷ 16 আমরা অইহুদীদের শিক্ষা দিই য়েন তারা উদ্ধার পেতে পারে; কিন্তু তারা আমাদের অইহুদীদের সত্য শিক্ষা দিতে বারণ করেছে৷ সেই ইহুদীরা পূর্বে যে পাপ করেছে, তার ওপর আরও পাপ যোগ করছে; আর তাই ঈশ্বরের ক্রোধ পরিপূর্ণরূপে এবং চূড়ান্তভাবে তাদের ওপর নেমে এসেছে৷ [16]

 

আরো উল্লেখ আছে, ইস্রাঈল বংশীয়রা ঈশ্বরের সঙ্গে চুক্তির শর্ত মানেনি। কাজেই ঈশ্বর তাদেরকে পরিত্যাগ করেছেন। ঈশ্বর তাদের সঙ্গে এক নতুন চুক্তি করবেন যা মেনে চললে তারা মুক্তি পাবে। পুরাতন চুক্তি জীর্ণ এবং তা লুপ্ত।

 

9আমি মিশর থেকে তাদের পূর্বপুরুষদের উদ্ধার করে আনার সময়, হাত ধরে তাদের পরিচালনা করার সময় তাদের সঙ্গে যে সন্ধিচুক্তি স্থাপন করেছিলাম, এ চুক্তি তার মত হবে না। তারা আমার সঙ্গে চুক্তির শর্ত মানল না তাই আমি তাদের পরিত্যাগ করলাম’ —প্রভু পরমেশ্বর বলেছেন এ কথা। 10প্রভু বলেন, ‘এই সব দিনের শেষে আমি ইসরায়েল কুলের সঙ্গে সন্ধি স্থাপনের এই শর্ত স্থির করব: আমি আমার সমস্ত বিধান তাদের অন্তরে প্রতিষ্ঠিত করব, তাদের হৃদয়ফলকে করব উৎকীর্ণ। আমি হব তাদের আরাধ্য ঈশ্বর, আর তারা হবে আমার প্রজা।11তারা কেউ প্রতিবেশীকে কিম্বা ভাইকে বলতে যাবে না, ‘প্রভুকে জ্ঞাত হও’ কারণ তারা ক্ষুদ্র মহান নির্বিশেষে সকলেই আমাকে জানবে।12তাদের অধর্ম আমি ক্ষমার চোখে দেখব, তাদের পাপ আমি মনে রাখব না।”13 এই সন্ধিচুক্তিকে ‘নতুন’ আখ্যা দেওয়াতে তিনি প্রথমটিকে পুরাতন বলে গণ্য করেছেন। যা পুরাতন ও জীর্ণ তা লুপ্ত হতে চলেছে। [17]

 

আমরা দেখলাম বাইবেলের নতুন নিয়ম অংশে স্পষ্টত ইস্রাঈল জাতির ঈশ্বরের সঙ্গে চুক্তিভঙ্গের উল্লেখ আছে এবং তাদের সঙ্গে পুরাতন চুক্তি লুপ্ত করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তাহলে কোন যুক্তিতে জায়নবাদী খ্রিষ্টানরা দাবি করে বহুকাল আগে ঈশ্বরের চুক্তি ও অঙ্গীকারের কারণে ইহুদিরা পবিত্র ভূমির মালিকানার অধিকারী?? বাইবেলের বর্ণনা থেকে প্রমাণ হয়ে গেল ইহুদিদের জন্য পবিত্র ভূমি ফিলিস্তিনের ঐশ্বরিক অধিকারের আর বৈধতা নেই।

 

বর্তমানে খ্রিষ্টানদের মাঝে বহু দল-উপদল আছে। বিভিন্ন দল-উপদলের বিশ্বাস বিভিন্ন। কিন্তু বাইবেলের সরাসরি বর্ণনার কারণে এই বিষয়গুলোতে অন্তত তাদের কারো দ্বিমতের সুযোগ নেইঃ ইহুদিরা যিশুখ্রিষ্টকে অবিশ্বাস করেছে এবং হত্যা করার চেষ্টা করেছে। ইহুদিরা যিশু খ্রিষ্টের সুসমাচার (ইঞ্জিল) এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেনি, যিশুকে মাসিহ হিসেবে মেনে নেয়নি। আর এই বিষয়গুলোর কারণে সন্দেহাতীতভাবে ইহুদিরা ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা ভঙ্গ করেছে। উপরের বাইবেলের নতুন নিয়মের সুস্পষ্ট বর্ণনাগুলোও আমরা দেখলাম যেখানে সরাসরি ইস্রাঈল জাতির পাপ, ঈশ্বরের সঙ্গে চুক্তি লঙ্ঘন, তাদের থেকে ঈশ্বরের রাজ্য নিয়ে নেওয়া এবং পুরাতন চুক্তি লুপ্ত হবার কথা উল্লেখ আছে। এই সুস্পষ্ট বর্ণনাগুলোর জন্য বহু প্রাচীনকাল থেকে খ্রিষ্ট ধর্মের মূলধারার সবগুলো দলের (ক্যাথোলিক, অর্থোডক্স, প্রোটেস্টান্ট) মাঝেই Supersessionism নামে এক প্রকারের বিশ্বাস ছিল  (যা Replacement Theology ও Fulfillment Theology নামেও পরিচিত)। এই বিশ্বাসের সারকথা হলঃ

 ইস্রাঈল জাতির অবাধ্যতার জন্য ঈশ্বর তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন এবং ঈশ্বর তাদের সঙ্গে পূর্বে যা অঙ্গীকার করেছিলেন তা আর ‘আক্ষরিকভাবে’ তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। {এই অঙ্গীকারগুলোর মাঝে পবিত্র ভূমি ফিলিস্তিনের অধিকারের বিষয়টিও শামিল।} যিশুকে অবিশ্বাসের জন্য তারা ঈশ্বরের বিরাগভাজন হয়েছে। যিশু খ্রিষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বর নতুন এক চুক্তি করেছেন, খ্রিষ্টীয় চার্চের দ্বারা ঈশ্বরের অঙ্গীকারগুলো পূর্ণ হবে। চার্চ হচ্ছে ‘নব ইস্রায়েল’ (New Israel)।  প্রাচীনকাল থেকেই এটা মূলধারার খ্রিষ্টীয় বিশ্বাস ছিল আজ অবধি মূলধারার খ্রিষ্টান দলগুলোর মধ্যে এই বিশ্বাসের আধিক্য দেখা যায়। [18] এই বিশ্বাসের কারণেই খ্রিষ্টানরা মনে করে যেসব ইহুদি যিশু খ্রিষ্টকে মাসিহ বলে মানে না, তারা ঈশ্বরের বাছাইকৃত জাতি (Chosen People) বলার উপযুক্ত নয়। এবং এ কারণেই যুগে যুগে ইহুদিদের প্রতি খ্রিষ্টানরা অত্যন্ত কঠোর আচরণ করতো। [19] ইতিহাস থেকে এ কারণেই আমরা দেখি যে ক্রুসেড যুদ্ধের সময়ে এবং আরো বিভিন্ন সময়ে ইউরোপে খ্রিষ্টানদের দ্বারা চরমভাবে নিপিড়িত হয়ে এসেছে ইহুদিরা। আর এই বিশ্বাস অনুসারে ঈশ্বরের সঙ্গে চুক্তিভঙ্গ, যিশু খ্রিষ্টকে অবিশ্বাস করা ইত্যাদি কাজের জন্য ইহুদিরা আর পবিত্র ভূমির অধিকারী হয় না। তাদের বিশ্বাস অনুসারে ঈশ্বরের অঙ্গীকারগুলো যেহেতু খ্রিষ্টীয় চার্চের মাধ্যমে পূর্ণ হবে, কাজেই ক্রুসেড যুগে খ্রিষ্টানরা নিজেরাই যুদ্ধ করে পবিত্র ভূমি ফিলিস্তিনের দখল নেবার চেষ্টা করতো। ফিলিস্তিনে ইহুদিদের রাজ্য প্রতিষ্ঠা সমর্থন তো বহু দূরের বিষয়! তারা বরং মুসলিমদের সঙ্গে সঙ্গে ফিলিস্তিনের ইহুদিদেরকে হত্যা করে এসেছে। [20]   

 

অবশ্য খ্রিষ্ট ধর্মের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক সত্য হচ্ছে, যুগের সাথে সাথে খ্রিষ্টানদের বিশ্বাসের বিবর্তন ঘটে। ষোড়শ শতকে কিছু পিউরিটান (Puritan) খ্রিষ্টানের মধ্যে Supersessionism অস্বীকারের প্রবণতা গড়ে উঠেছিল। [21] পরবর্তীতে উনিশ শতকে কিছু ইংরেজ ইভানজেলিক্যাল প্রোটেস্টান্ট খ্রিষ্টানের মধ্যে এই চিন্তাধারা আরো প্রবল হয় এবং পূর্বের খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসের একদম বিপরীত প্রান্তে গিয়ে তারা বলা শুরু করে, ইহুদি জাতির ফিলিস্তিনে ফিরে যাওয়া বিশ্বের নাজাত লাভের প্রথম ধাপ হতে পারে। [22] জায়নবাদের সূচনাতেও এদের ভূমিকা ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ইস্রায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরে অনেক খ্রিষ্টান Supersessionism এর বিশ্বাসকে পরিত্যাগ করে এবং এই প্রসঙ্গে নতুনভাবে বাইবেল ব্যাখ্যা করতে শুরু করে। [23] বর্তমান বিভিন্ন খ্রিষ্টান দলের মধ্যে বিশেষ করে ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানদের মধ্যে জায়নবাদের আধিক্য দেখা যায়। তারা আবহমান কাল থেকে বাইবেলের আলোকে প্রতিষ্ঠিত Supersessionism বিশ্বাসের বিপরীতে গিয়ে ভিন্নভাবে বাইবেলকে ব্যাখ্যা করে। যদিও তারা এখনো সংখ্যাগরিষ্ঠ খ্রিষ্ট ধর্মালম্বী গোষ্ঠী নয়।

 

 

তথ্যসূত্রঃ


[1] বাইবেল, আদিপুস্তক (Genesis) ১৮ : ১৯

https://www.wordproject.org/bibles/ben/01/18.htm#0

[2] বাইবেল, যাত্রাপুস্তক (Exodus) ১৯ : ৫-৮

https://www.wordproject.org/bibles/ben/02/19.htm#0

[3] বাইবেল, দ্বিতীয় বিবরণ (Deuteronomy) ৪ : ১

https://www.wordproject.org/bibles/ben/05/4.htm#0

[4] বাইবেল, দ্বিতীয় বিবরণ (Deuteronomy) ৫ : ৩৩

https://www.wordproject.org/bibles/ben/05/5.htm#0

[5] বাইবেল, যিহোশূয় (Joshua) ২৩ : ১৬

https://www.wordproject.org/bibles/ben/06/23.htm#0

[6] বাইবেল, লেবীয় পুস্তক (Leviticus) ২৬ : ১৮, ২১, ২৩-২৪, ২৭-২৮

আগ্রহী পাঠক সম্পূর্ণ

https://www.bible.com/bible/2412/LEV.26.BCV

[7] আগ্রহী পাঠক এ প্রসঙ্গে বাইবেলের দ্বিতীয় বিবরণ (Deuteronomy) ২৮ নং অধ্যায় সম্পূর্ণ অধ্যায়ন করতে পারেন।

https://www.wordproject.org/bibles/ben/05/28.htm#0

[8] Exile _ Texts & Source Sheets from Torah, Talmud and Sefaria's library of Jewish sources (Sefaria)

https://www.sefaria.org/topics/exile?sort=Relevance&tab=sources

অথবা https://archive.is/wip/RmLbh (আর্কাইভকৃত)

[9]  Discover the Four Exiles of the Jewish People - The history of galut - Chabad.org

https://www.chabad.org/library/article_cdo/aid/3671017/jewish/Discover-the-Four-Exiles-of-the-Jewish-People.htm

অথবা https://archive.is/hISkO  (আর্কাইভকৃত)

[10]  “Galut means exile. Nearly 2,000 years ago the Jewish nation was driven out of its homeland and sent off into a tear-soaked galut that lasts to this very day. We wait and yearn for the day when our galut and suffering come to an end, when we will be returned to the Holy Land, with the coming of our redeemer, the Moshiach."”

From: “Understanding Galut (Exile) - Chabad.org”

https://www.chabad.org/library/article_cdo/aid/1157488/jewish/Understanding-Galut-Exile.htm

অথবা  https://archive.is/wip/EbPX3  (আর্কাইভকৃত)

[11]  বাইবেল, মথি (Matthew) ২৩ : ৩৩-৩৫

https://www.wordproject.org/bibles/ben/40/23.htm#0

[12]  বাইবেল, মথি (Matthew) ২৪ : ১-২

https://www.wordproject.org/bibles/ben/40/24.htm#0

[13]  বাইবেল, মথি (Matthew) ২১ : ৪২-৪৫

https://www.wordproject.org/bibles/ben/40/21.htm#0

[14] স্বয়ং যিশু তাঁর ব্যাপারে বলেছেনঃ

 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, স্ত্রীলোকের গর্ভে যত মানুষের জন্ম হয়েছে তাদের মধ্যে বাপ্তিস্মদাতা যোহনের চেয়ে কেউই মহান নয়

 বাইবেল, মথি (Matthew) ১১ : ১১

https://www.wordproject.org/bibles/ben/40/11.htm#0

[15]  বাইবেল, লুক (Luke) ৩ : ৭-৯

 https://www.wordproject.org/bibles/ben/42/3.htm#0

[16]  বাইবেল, ১ থিষলনীকীয় (1 Thessalonians) ২ : ১৪-১৬

https://www.wordproject.org/bibles/ben/52/2.htm#0

[17]  বাইবেল, ইব্রীয়দের প্রতি পত্র (Hebrews) ৮ : ৯-১৩

https://www.bible.com/bible/1690/HEB.8.BENGALCL-BSI

[19] Supersessionism _ Theopedia

https://www.theopedia.com/supersessionism

অথবা https://archive.is/Qvc8n (আর্কাইভকৃত)

[20] দেখুনঃ Jewish People Caught in the Crusades _ Encyclopedia.com

https://www.encyclopedia.com/history/encyclopedias-almanacs-transcripts-and-maps/jewish-people-caught-crusades

অথবা https://archive.is/wip/C0LHd (আর্কাইভকৃত)

[22]  Israel A  History By Anita Shapira, Page 29

[23] Supersessionism - Bible Odyssey

https://www.bibleodyssey.org/articles/supersessionism/

অথবা https://archive.is/wip/fH8yk (আর্কাইভকৃত)